গ্যাস নিয়ে চিন্তা-ভাবনা
৭ মার্চ ২০১৪ইউক্রেনকে সেইরকমই চরমপত্র দিয়েছে রাশিয়া৷ এবং রাশিয়া যদি সত্যিই ইউক্রেনে গ্যাস পাঠানো বন্ধ করে, তাহলে সেটা হবে ‘ওয়ার্স্ট সিনারিও' – বলেছে গ্রিস৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত সোমবারেই জোটের গ্যাস কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ বা গ্যাস সমন্বয় গোষ্ঠীর একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করে, ‘‘যদি (গ্যাস সরবরাহে) কোনো বড় ব্যাঘাত ঘটে'', তবে কি করণীয়, তা যাচাই করার জন্য৷ এই গ্যাস সমন্বয় গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়েছিল অতীতে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে অনুরূপ জ্বালানি সংক্রান্ত বিরোধ চলাকালীন৷
মস্কো আর কিয়েভের নতুন সরকারের মধ্যে যাবতীয় উত্তেজনা সত্ত্বেও রুশ গ্যাস কোম্পানি ‘গাজপ্রম' এ যাবৎ ইউক্রেনকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি৷ তার একটা কারণ সম্ভবত এই যে, এই প্রাক্তন সোভিয়েত গণরাজ্যটি দিয়েই রুশ প্রাকৃতিক গ্যাস ইউরোপ অভিমুখে বয়৷ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন হলো রুশ গ্যাসের সবচেয়ে বড় খদ্দের৷
চিন্তায় পড়েছে গ্রিস
ইইউ-এর গ্যাস সমন্বয় গোষ্ঠীর জরুরি বৈঠকে গ্রিসের প্রতিনিধিরা হিসেব কষে দেখান যে, গ্রিসের এলএনজি বা লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস, অর্থাৎ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার এখন ৭০ শতাংশ পূর্ণ এবং পরের ডেলিভারির তারিখ হলো ১৪ই মার্চ৷ সোমবারের বৈঠকটি থেকে আরো জানা যায় যে, ইইউ-এর প্রায় সব দেশেই পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস মজুদ থাকলেও, তার মধ্যে কতটা তারা ইউক্রেনে ফেরৎ পাঠাতে পারবে, তার নিশ্চয়তা নেই৷ ওদিকে ইউক্রেনের প্রয়োজন হলো দিনে ১৫ থেকে ৩৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস৷
এবার শীত পড়ল কৈ?
এবং শীত না পড়ার ফলে ইইউ-এর ২৮টি দেশে আজ ২০১২ সালের তুলনায় প্রায় পাঁচ বিলিয়ন কিউবিক মিটার, এবং ২০১৩ সালের তুলনায় ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার বেশি গ্যাস মজুদ আছে৷ এর অর্থ, রাশিয়া থেকে গ্যাস আসা বন্ধ হলে এক সপ্তাহ চালিয়ে নেওয়া যাবে, কিন্তু তিন সপ্তাহ গ্যাস বন্ধ থাকলে – এবং নতুন করে শীত পড়লে – জ্বালানি শক্তির দাম বাড়তে পারে, যেটা ইউরোপীয় আঙ্গিকে একটা ফ্ল্যাশপয়েন্ট৷
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এর আগেও গ্যাসের দাম নিয়ে বিরোধ বেঁধেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইইউ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে: গ্যাস সরবরাহ প্রণালীর অবকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়েছে, সরবরাহের উৎস বাড়িয়েছে এবং সদস্যদেশগুলিকে আরো বেশি গ্যাস মজুদ রাখতে বলেছে৷
কার, কোথায়, কতটা
ইউরোপীয় কমিশনের প্রশ্নের উত্তরে রোমানিয়া জানিয়েছে, আরো শীত পড়লে তারা আর প্রতিবেশী বুলগেরিয়াকে সাহায্য করতে পারবে না৷ পোল্যান্ড জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পরিবর্তে বেলারুস হয়ে গ্যাস আমদানি করতে পারে, তবে গ্যাস ডাইভার্ট করার জন্য গাজপ্রমের অনুমতি লাগবে৷ স্লোভাকিয়াও ইউক্রেনে গ্যাস পাঠাতে পারে, তবে তার জন্য একটি রিভার্স-ফ্লো লিংক সংক্রান্ত চুক্তির প্রয়োজন পড়বে৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)